স্টেডিয়ামের পাশে জুমার নামাজ আদায় করলেন ফুটবল ভক্তরা

চলতি কাতার বিশ্বকাপ শুরুর পর প্রথমবার অনুষ্ঠিত জুমার নামাজে ছিল মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার ২৫ নভেম্বর দুপুরে সুললিত কণ্ঠে ‍জুমার আজানের ধ্বনি ভেসে আসে দোহার মসজিদগুলো থেকে। বিশ্বের নানা দেশ থেকে খেলতে আসা মুসলিম খেলোয়াড়, ফুটবল ভক্ত-সমর্থকসহ স্থানীয় মুসল্লিতে পূর্ণ হয় স্টেডিয়ামের আশপাশের এলাকা।

গতকাল কাতার-সেনেগালের ম্যাচ আল-থুমামা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। ফলে অনেক আগেই স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন দেশ দুটির ফুটবলভক্তরা। জুমার নামাজের কথা বিবেচনা করে স্টেডিয়ামের বাইরে নামাজের ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ। ফলে মুহূর্তেই ভরে যায় স্টেডিয়ামের আশপাশের এলাকা। জুমার নামাজ শুরুর আগে স্টেডিয়ামের বাইরে কার্পেটে বসে ইমামের কথা শুনছিলেন উপস্থিত মুসল্লিরা।

সাধারণত এমন দৃশ্য অতীতের ফুটবল বিশ্বকাপে কখনো দেখা যায়নি। তাই মুসলিম ভক্তদের মধ্যে তৈরি হয় অন্যরকম অনুভূতি। কারণ সব স্টেডিয়ামে রয়েছে নামাজের স্থান ও হালাল খাবারের ব্যবস্থা। তাছাড়া অ্যালকোহল নিষেধাজ্ঞার পর স্টেডিয়ামের মধ্যে এ নিয়ে কোনো বাগবিতণ্ডা শোনা যায় না। তা ছাড়া শহরের রাত্রিকালীন ফ্যান ফেস্টিভাল ইভেন্টে মুসলিম ভক্তদের জন্য নামাজের বিরতি দেওয়া হয়। তাই এমন উৎসবগুলো দারুণ উপভোগ করছেন বিভিন্ন দেশের মুসলিম ভক্তরাও।

এদিকে বিশ্বকাপ দেখতে মরক্কো থেকে আসা ইউসুফ আল-ইদবারি নামে এক ভক্ত রয়টার্সকে বলেন, ‘জুমার নামাজ পড়তে আমি একটি মুসলিম দেশে এসেছি। এটি আমার কাছে এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে আনন্দদায়ক বিষয়।’ অন্যান্য মুসল্লির মতো তিনিও জুতা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন।

এ সময় দক্ষিণ আফ্রিকান ফুটবলপ্রেমী রিদওয়ান গোলাম হোসেন জানান, তিনি ২০১০ সালের দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপসহ বিভিন্ন সময় নামাজের জায়গা খুঁজতে মাঠ ছেড়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘খেলার সময় স্টেডিয়ামের বাইরে গেলে আপনি হয়তো একটি দলের গোল মিস করবেন বা আপনি কাউকে বিদায় মিস করবেন। কিন্তু এবার মনে হচ্ছে যে এই বিশ্বকাপটা যেন আমার জন্য। এ বিশ্বকাপের সব কিছু আমার সঙ্গে মানানসই। এবারই প্রথম এমনটি হয়েছে।’

এদিকে কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধন ঘিরে দোহা ও আশপাশের শহরগুলো সেজেছে বর্ণিল সাজে। গত রবিবার (২০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের উদ্বোধনী পর্বে পাঠ করা পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত। তাতে মার্কিন অভিনেতা মর্গান ফ্রিম্যান ও কাতারি তরুণ গানিম আল-মিফতাহর এক সংলাপে জাতিগত সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া হয়। সূত্র : মিডলইস্ট আই